Wellcome to National Portal
কৃষি তথ্য সার্ভিস (এআইএস) গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
Text size A A A
Color C C C C

মুড়ি ধান (Ratoon Rice)

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- অকাল বন্যা, খরা, লবণাক্ততা ও শৈত্যপ্রবাহের কারণে ধানের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্যের চাহিদা পূরণে ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির বিকল্প নেই। ধানের উৎপাদন বৃদ্ধির একটি উপায় হিসেবে মুড়ি ধান চাষের ওপর গুরুত্ব দেয়া জরুরি। কারণ খাদ্য নিরাপত্তায় মুড়ি ধান একটি গুরুত্বপূর্র্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। বোরো-পতিত-রোপা আমন শস্য বিন্যাসে এ মুড়ি ধান চাষ করে মূল ফসলের প্রায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব।
 

বোরো মৌসুমের আগাম জাতে জমির মূল ধান কাটার পর ধান গাছের নাড়া থেকে নতুন কুশি জন্মায়। এ কুশি থেকে আমরা যে ধান পাই তাকেই মুড়ি ধান বলে। আগাম জাত মুড়ি ধান চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী। মুড়ি ধান উৎপাদন নতুন কোনো ধারণা নয়। আবহমান কাল থেকে আমাদের দেশের মধ্যম উঁচু অঞ্চলের কৃষক জমিতে মুড়ি/নাড়া রেখে ধান উৎপাদন করত। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, তাইওয়ান, ফিলিপাইন, ব্রাজিল, থাইল্যান্ড ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশে এ পদ্ধতির ব্যবহার রয়েছে।
 

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ১৯৮৭ সাল থেকে মুড়ি ধানের ওপর গবেষণা শুরু করে। মাঠ পরীক্ষণে দেখা গেছে, বিআর১৭ জাত চাষ করে মূল ফসলে প্রতি বিঘায় ০.৮০ টন এবং মুড়ি ধান থেকে প্রতি বিঘায় ০.২০ টন ফলন পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে মুড়ি ধান উৎপাদনের জন্য জমিতে মূল ফসল কাটার ২০ দিন আগে বিঘাপ্রতি ৫ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করা হয়। এ ছাড়া ২০০৪-০৫ এবং ২০০৫-০৬ সালে ব্রি ধান৩৪, ব্রি ধান৩৭ এবং ব্রি ধান৩৮ এ মুড়ি চাষ করে দেখা গেছে, হেক্টর প্রতি সর্বোচ্চ ২.২১ টন পর্যন্ত ফলন পাওয়া গেছে।
গত বোরো মৌসুমে শেরপুর জেলার নালিতাবাড়ি উপজেলায় মুড়ি ধানের চাষাবাদ পদ্ধতি এবং ফলন পর্যবেক্ষণ করে বিআর২৬ এবং ব্রি ধান২৮ এ মুড়ি ধানের ভালো ফলন পাওয়া গেছে। যেসব কৃষক ১২-১৮ ইঞ্চি নাড়া রেখে বোরো ধান কেটেছেন তাদের জমিতে মুড়ি ধানের ফলন ভালো হয়েছে। এসব ক্ষেত্রে হেক্টরপ্রতি মুড়ি ধানের ফলন পেয়েছেন ১-১.৫ টন। কিছু কিছু কৃষক মুড়ি ধানের জন্য কীটনাশক ব্যবহার করেছেন এবং আগে থেকেই গরু, ছাগল এসবের ক্ষতি থেকে মুড়ি সংরক্ষণ করেছেন। বর্তমান বাজারদরে মুড়ি ধান মাড়াই-ঝাড়াই ও শুকানো বাবদ আনুমানিক খরচ একরপ্রতি ৪ হাজার-৫ হাজার টাকা এবং উৎপাদিত ধানের মূল্য প্রতি একরে ৮ হাজার-১০ হাজার টাকা, যা বেশ লাভজনক। অন্তত ৫ হাজার টাকা লাভ হয়।

 

চাষ পদ্ধতি
 বোরো মৌসুমের আগাম জাত বিআর২৬ ও ব্রি ধান২৮ মুড়ি ধান উৎপাদনের জন্য উপযোগী। এ পদ্ধতিতে ভালো ফলন পাওয়ার জন্য এ জাতগুলোর পাকা ধান কা- সবুজ থাকা অবস্থায় কাটতে হবে;
সাধারণত বোরো মৌসুমে মধ্যম উঁচু জমিতে মুড়ি ধান চাষ করা যায়;
মুড়ি ধান চাষের জন্য মূল ফসল কাটার সময় গাছের গোড়া থেকে ২০-৩৫ সেন্টিমিটার নাড়া বা ২-৩টি নোড বা পর্ব রেখে ফসল কাটতে হবে;
মূল ফসল কাটার ৫-৭ দিন পর বিঘাপ্রতি ৫ কেজি ইউরিয়া ও ৫ কেজি পটাশ সার প্রয়োগ করলে বিঘাপ্রতি ৫-৬ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়;
 বোরো-পতিত-রোপা আমন এ শস্য বিন্যাস মুড়ি ধান চাষের জন্য সবচেয়ে উপযোগী;
মুড়ি ধান চাষে মাটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি রাখতে হবে যেন নাড়া থেকে কুশি জন্মাতে পারে এবং নতুন কুশি মাটি থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান গ্রহণ করতে পারে;
মুড়ি ধান চাষের জন্য এমন জাতের ধান নির্বাচন করতে হবে যার কুশি উৎপাদন ক্ষমতা বেশি এবং বাতাসে সহজে ঢলে পড়ে না;
মুড়ি ধানে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের আক্রমণ হলে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রয়োজনে বালাইনাশক প্রয়োগ করতে হবে।

 

মুড়ি ধান চাষের সুবিধা
এ পদ্ধতিতে একবার জমি চাষ করেই দুইবার ফসল পাওয়া যায় এবং মূল ফসলের অতিরিক্ত প্রায় ৫০ ভাগ পর্যন্ত ফলন হতে পারে;
এ পদ্ধতিতে বীজ ধান, বীজতলা ও জমি তৈরি এবং রোপণ খরচ লাগে না বিধায় এটি ব্যয় সাশ্রয়ী প্রযুক্তি;
মূল ফসলের চেয়ে মুড়ি ধান পাকতে ৬৫ ভাগ কম সময় লাগে;
মুড়ি ধানের জন্য জমি তৈরি ও চারা রোপণ করতে হয় না এবং সেচ, সার ও শ্রমিক খরচ ৫০-৬০ ভাগ কম লাগে;
একবার চাষ করে একই জমি থেকে দুইবার ফলন পাওয়ায় শস্যের নিবিড়তাও বাড়ে।

 

মুড়ি ধান চাষে সতর্কতা
মুড়ি ধান পোকামাকড়ের আশ্রয়স্থল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় পরবর্তী মৌসুমে পোকামাকড়ের প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে ক্লোরোপাইরিফস (২০ তরল) এবং ফেনিট্রোথিয়ন (৫০ তরল) হেক্টরপ্রতি ১ লিটার হিসেবে প্রয়োগ করতে হবে;
মুড়ি ধান চাষের সফলতা মূল ফসলের আন্তঃপরিচর্যার ওপর নির্ভর করে;
মুড়ি ধান চাষে পরবর্তী মৌসুমের জমি তৈরি ও ফসল চাষে দেরি হতে পারে। আগাম জাত নির্বাচন মুড়ি ধান ফসলের জন্য ভালো।
মুড়ি ধান চাষের সময় জমিতে ১-১.৫ ইঞ্চি পানি রাখলে ফলন ভালো হয়।

 

ড. মো. শাহজাহান কবীর* ড. মো. আনছার আলী** ড. ভাগ্য রানী বণিক***
*পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা); **পরিচালক (গবেষণা) এবং ***মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, জয়দেবপুর, গাজীপুর


COVID19 Movement Pass Online Police Clearance BD Police Help line Expatriate Cell Opinion or Complaint NIS Bangladesh Police Hot Line Number Right to Information PIMS Police Cyber Support for Women BPWN Annual Training Workshop Achievement & Success PHQ Invitation Card
Press Release Recruitment Information Procurement / Tender Notice Legal Instrument Innovation Corner Detective Magazine Bangladesh Football Club Diabetes-Covid19 Exam Results Accident Info Important Forms

Apps

icon icon icon icon icon icon